গর্ভাবস্থায় কি খেলে বাচ্চার গায়ের রং উজ্জ্বল হয়

 

গর্ভাবস্থায় কি খেলে বাচ্চার গায়ের রং উজ্জ্বল হয় আপনি যদি সেই ব্যাপারী ব্যাপারে জানতে আগ্রহী হন তাহলে আজকের কনটেন্টটি আপনার জন্য। এছাড়াও আপনি কনটেন্টটিতে জানতে পারবেন কি খেলে বাচ্চার গায়ের রং কালো হয় এবং কোন খাবারটি গর্ভাবস্থায় বাচ্চার জন্য ক্ষতিকর। এসব কিছু সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে কনটেন্টটি পুরোটা পড়ুন।

গর্ভাবস্থায় কি খেলে বাচ্চার গায়ের রং উজ্জ্বল হয়

গর্ভবতী মাদের গর্ভাবস্থায় একটু বেশি পুষ্টিকর খাবার খাওয়া উচিত। কারণ গর্ভাবস্থায় গর্ভবতী মায়েরা যে খাবার খায় সেটা শুধু তারাই খায় না গর্ভে থাকা  শিশুটি ও সেই খাবারে ভাগ বসায়। বৈজ্ঞানিক মতে শিশুর গায়ের রং ফর্সা হবে না কালো হবে তা নির্ভর করে বাবা মা থেকে পাওয়া জিনের উপর কোন খাবারের  উপর না। তবে কিছু কিছু ডাক্তারের অভিমত ও গ্রামবাংলায় প্রচলিত ধারণা অনুযায়ী বেশ কিছু খাবার রয়েছে যেগুলো গর্ভবতী মা ছেলে খেলে বাচ্চার গায়ের রং ফর্সা হয়। আমরা সেই খাবারগুলো সম্পর্কে জানি আসুন।

পোস্ট সূচিপত্রঃগর্ভাবস্থায় কি খেলে বাচ্চার গায়ের রং উজ্জ্বল হয় 

গর্ভাবস্থায় কি খেলে বাচ্চার গায়ের রং উজ্জ্বল হয় 

বর্তমান যুগে মানুষ গায়ের রং দিয়ে মানুষের সৌন্দর্য যাচাই করে। বিদেশে এ বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ না হলেও আমাদের দেশে এই ব্যাপারটি একটু বেশি গুরুত্বপূর্ণ। মেয়েদের ক্ষেত্রে গায়ের রং ফর্সা না কালো এ বিষয়টি বেশি প্রভাব ফেলে। তাই প্রত্যেক বাবা-মা চাই তার অনাগত সন্তানটির গায়ের যেন রং উজ্জ্বল হয়। এজন্য তারা যে কোন কিছু করতে রাজি। কিন্তু গর্ভাবস্থায় থাকা সন্তানের জন্য তাকে সঠিক পুষ্টিকর খাবার দেয়া ছাড়া বাইরে থেকে আর কিছুই করার থাকে ।

সেজন্য গর্ভবতী মাকে নিয়ম করে বিভিন্ন পুষ্টিকর খাবার,শাকসবজি, ফলমূল ,মাছ ,মাংস, দুধ,  ডিম ইত্যাদি পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে যাতে গর্ভে থাকে বাচ্চাটির সঠিক বিকাশ বৃদ্ধি ঘটে এবং তার গায়ের রং উজ্জ্বল হয়। অনেক অনেক পুষ্টিকর খাবারের মধ্যেও ঠিক কোনগুলি খেলে বাচ্চার গায়ের রং উজ্জ্বল হয় সে ব্যাপারে আমরা জানবো।

বাচ্চার গায়ের রং উজ্জ্বল করতে ডাব

বাচ্চার গায়ের রং উজ্জ্বল করতে গর্ভাবস্থায় ডাবের পানি খুবই গুরুত্বপূর্ণ ।ডাবের পানি বা ডাবের শাঁস বহুল পুষ্টিগুণে ভরপুর একটি খাবার। এটি গর্ভাবস্থায় মা ও শিশুর জন্য খুবই উপকারী। গর্ভাবস্থায়  ডাবের পানি পানি খেলে তা বাচ্চার গায়ের কালো রং দূর করে ফর্সা করে। বাচ্চার গায়ে অতিরিক্ত কোন ময়লা থাকলে ডাবের পানি খেলে তা কমে যায়।

ডাবের পানি মায়ের শরীরকে ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করে। হজম ক্ষমতা বাড়ায়, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। এছাড়াও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে,বমি বমি ভাব কমায়।

আরো পড়ুনঃ গর্ভাবস্থায় নিজেকে মানসিক ও শারীরিকভাবে ঠিক রাখার উপায়

বাচ্চার গায়ের রং উজ্জ্বল করতে কমলালেবু

বাচ্চার গায়ের রং উজ্জ্বল করতে কমলার রস খুবই উপকারী। গর্ভবতী মায়ের জন্য ভিটামিন সি খুবই দরকারি। কমলা লেবু একটি রসালো ফল যা ভিটামিন সি তে ভরপুর। ভিটামিন সি সমৃদ্ধ কমলালেবু যেমন আপনার দেহের ভিটামিন সি চাহিদা পূরণ করবে তেমনি আপনার অনাগত সন্তানের গায়ের রং উজ্জ্বল করতে সাহায্য করবে।

পনি আপনার গর্ভাবস্থার প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত কমলালেবু খেতে পারেন। কমলালেবুর কোন ক্ষতিকর দিক নাই। র্ভাবস্থা নিয়মিত কমলালেবু খেলে আপনার অনাগত সন্তানের ত্বক ফর্সা হবে এবং ভালো থাকবে।

বাচ্চার গায়ের রং উজ্জ্বল করতে দুধের ভূমিকা

আমরা জানি দুধ বহুল পুষ্টি সমৃদ্ধ একটি খাবার এবং দুধ গর্ভাবস্থায় মা ও শিশুর জন্য খুবই উপকারী। গর্ভাবস্থায় প্রতিদিন নিয়ম করে দুধ পান করা মা ও শিশু উভয়ের জন্য খুবই জরুরী। দুধ প্রোটিন এবং ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ একটি খাবার। তাই এটি খেলে আপনার সন্তানের ক্যালসিয়াম এবং প্রোটিনের ঘাটতি পূরণ হবে এবং শরীরে গঠন ও বৃদ্ধিতে সাহায্য করবে। দুধে থাকা পুষ্টিগুণ নিয়মিত গর্ভাবস্থার শিশুকে দেয়া হলে শিশুর গায়ের রং উজ্জ্বল হয়।

গর্ভাবস্থার কিছুদিন পর থেকে দুধের সাথে আপনি যদি জাফরান মিশিয়ে খান তাহলে এটি দুধের পুষ্টিগুণকে আরো বাড়িয়ে তুলবে। জাফরান গায়ের রং উজ্জ্বল করতে ভূমিকা রাখে। বড়রাও গায়ের রং উজ্জ্বল করতে জাফরানের তৈরি সাবান ,ফেসওয়াশ ব্যবহার করে থাকে।

গর্ভাবস্থায় কি খেলে বাচ্চার গায়ের রং উজ্জ্বল হয়

বাচ্চার গায়ের রং উজ্জ্বল করতে শসা

শসা আমাদের ত্বক ও শরীরের জন্য ভীষণই উপকারী।শসা একটি ঠান্ডা খাবার। তাই এটি খেলে মা ও শিশুর শরীর হাইড্রেট থাকে। গর্ভাবস্থায় শসা খেলে এটি শিশুর জন্য দরকারি পানির চাহিদা পূরণ করে। আমরা জানি শসা আমাদের ত্বকের জন্য খুবই উপকারী। বাসায় থাকে প্রায় ৯০% পানি ,ভিটামিন সি , ভিটামিন কে এবং ক্যাফিক এসিড জাতককে উজ্জ্বল মসৃণ এবং ফর্সা করতে সাহায্য করে।

আপনি আপনার গর্ভাবস্থায় নিয়মিত শসা খেতে পারেন। এতে আপনার এবং আপনার শিশু উভয়েরই শরীর ভালো থাকবে। শসা আপনার অনাগত শিশুর ত্বক উজ্জল করতে সাহায্য করবে।

আরো পড়ুনঃ গর্ভাবস্থায় যে কাজগুলো করা ক্ষতিকর এবং ঝুঁকিপূর্ণ

বাচ্চার গায়ের রং উজ্জ্বল করতে টমেটোর ভূমিকা

বাচ্চার গায়ের রং উজ্জ্বল করতে টমেটো ভুমিকা অপরিসীম। টমেটো একটি রঙিন খাবার। এতে রয়েছে  ক্রোমোপ্লাস্ট, ভিটামিন সি এবং লাইকোপেন। যা গর্ভাবস্থায় মা ও শিশু উভয়ের জন্যই ভীষণ উপকারী। ক্রোমোপ্লাস্ট ও ভিটামিন সি বাচ্চার গায়ের রং উজ্জ্বল করতে এবং গায়ে কালো ছোপ দাগ দূর করতে সাহায্য করে।

টমেটোতে থাকা লাইকপেন গর্ভাবস্থায় মা ও শিশুকে সূর্যের ক্ষতিকারক রশ্মি থেকে রক্ষা করে। দেহে বিভিন্ন পুষ্টির চাহিদা পূরণ করেন। আপনি যদি গর্ভবতী হয়ে থাকেন তাহলে নিয়মিত টমেটো খেতে পারেন এটা আপনার এবং আপনার শিশু উভয়ের শরীরের জন্য উপকারী।

বাচ্চার গায়ের রং উজ্জ্বল করতে ড্রাই ফুডস

ড্রাই ফুডস ভীষণই উপকারী এবং পুষ্টিগুনে ভরপুর একটি খাবার। সাধারণত কাঠবাদাম, পেস্তাবাদাম, কাজুবাদাম, কিসমিস ,বাদাম এবং বিভিন্ন ফ্রোজেন ফল এগুলোকেই ড্রাই ফুডস বলা হয়।ড্রাই ফুডসে রয়েছে বিভিন্ন ভিটামিন, খনিজ পদার্থ এবং প্রোটিন ইত্যাদি। যা শরীরের জন্য ভীষণই উপকারী। আপনি যদি গর্ভবতী হয়ে থাকেন এবং বাচ্চার গায়ের রং উজ্জ্বল করতে চান  তাহলে আপনি নিয়মিত ড্রাই ফুডস খেতে পারেন।

অনেক স্কিন স্পেশালিস্ট ডাক্তারদের ধারণামতে ড্রাই ফুডস এবং বিভিন্ন বাদাম ত্বকের রং উজ্জ্বল করতে সাহায্য করে । ড্রাই ফুডস ত্বকের কালো ছোপ দাগ বয়সের দাগ দূর করতে সাহায্য করে।

গায়ের রং উজ্জ্বল করতে চেরি ও বেরি জাতীয় ফল

বাচ্চার গায়ের রং উজ্জ্বল করতে চেরি ওবেরি জাতীয় ফল অনেক উপকারী। চেরি ও বেরি জাতীয় ফলের মধ্যে রয়েছে ভিটামিন সি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে সাহায্য করে।  ত্বককে বিভিন্ন ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করে।

চেরি ও বেরি জাতীয় ফলের মধ্যে রয়েছে ব্ল্যাকবেরি , ব্লুবেরি, ট্রবেরি ইত্যাদি। তাই আপনার শিশুর গায়ের রং ফর্সা করতে চাইলে  গর্ভাবস্থায় থাকাকালীন নিয়মিত চেরি ও বেরি জাতীয় ফল খেতে পারেন।

গর্ভাবস্থায় কি খেলে বাচ্চার গায়ের রং উজ্জ্বল হয়

বাচ্চার গায়ের রং ফর্সা করতে ডিম

ডাক্তারদের মতে এবং গ্রামবাংলায় পরিচিত ধারণা অনুযায়ী বাচ্চার গায়ের রং উজ্জ্বল করতে গর্ভাবস্থার দুই -তিন মাস হতে শুরু করে বাচ্চা হওয়ার আগে পর্যন্ত ডিমের সাদা অংশ খেলে বাচ্চার গায়ের রং উজ্জ্বল হয়। ডিমের কুসুমও গর্ভাবস্থায় মা ও শিশুর জন্য ভীষণ উপকারী এজন্য ডিমের কুসুমও বাদ দেওয়া যাবেনা।

ডিমের ৯০% পুষ্টিগুণ থাকে ডিমের কুসুমের । ডিম একটু প্রোটিন জাতীয় খাবার নিয়মিত ডিম খেলে বাচ্চার পুষ্টিহীনতা দূর হয়। ব্রেনের বিকাশ ঘটে, বাচ্চার ওজন বাড়ে এবং দ্রুত বৃদ্ধি ঘটে। আপনি যদি গর্ভবতী হয়ে থাকেন তাহলে বাচ্চার গায়ের রং উজ্জ্বল করতে এবং দ্রুত বৃদ্ধির জন্য নিয়মিত দুবেলা দুটি ডিম খাওয়া উচিত।

আরো পড়ুনঃগর্ভাবস্থায় বাচ্চা সাড়া দেওয়া হঠাৎ করে বন্ধ করে দিলে করনীয় কি

কি খেলে বাচ্চার গায়ে রং কালো হয় 

কি খেলে বাচ্চার গায়ের রং কালো হবে এইটা নিয়ে গর্ভাবস্থায় মা এবং বাবা খুবই দ্বিধাদ্বন্দ্বে থাকেন। কারণ একটা সুন্দর ফর্সা ফুটফুটে শিশু হোক সেটা সবাই চায়। কিন্তু চাওয়াটা এরকম হওয়া উচিত না । একটা সুস্থ সন্তান হোক এটাই চাওয়া উচিত। বাচ্চা হওয়ার পর তার গায়ের রং উজ্জ্বল করার জন্য কিছুই করার থাকে না কিন্তু হওয়ার আগে উজ্জ্বল করার জন্য যে যে খাবার গুলো খেতে হয় সে সম্পর্কে আমরা বিস্তারিত জেনেছি। এখন কি খেলে বাচ্চাটা গায়ের রং কালো হয় সে সম্পর্কে জানব।

গর্ভাবস্থায় মা ও শিশু উভয়ের জন্যই প্রায় সব খাবারই দরকারি। সেজন্য এমন কোন খাবার নাই যা গর্ভাবস্থায় ফেলে শিশুর গায়ের রং কালো হয়। বাচ্চার গায়ের রং কালো হওয়ার একটাই কারণ সেটা হলো জিন যা বাবা-মা বা বংশের অন্য লোকদের থেকে আসে ।

আপনার অবস্থায় কি খেলে বাচ্চার গায়ের রং উজ্জ্বল হয় সে সম্পর্কে আমার নিজস্ব মন্তব্য

গর্ভাবস্থায় কি খেলে বাচ্চার গায়ের রং উজ্জ্বল হয় এবং  কিভাবে কালো হয় আজকের কনটেন্টটিতে আমি প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত সে সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। কিন্তু আমার মতে বাচ্চার গায়ের রং কালো না ফর্সা হচ্ছে গর্ভাবস্থায় মা বা পরিবারের এই ব্যাপার নিয়ে ভাবা উচিত না। বাচ্চা সৃষ্টিকর্তার দেওয়া আশীর্বাদ। সেটা কাল হোক বা ফর্সা সুস্থভাবে পৃথিবীতে আসছে কিনা সেটাই  জরুরি। তবুও নিয়মিত খাদ্যাভ্যাস এবং উপরিক্ত খাবারগুলো নিয়মিত খেলে এটা আপনার গায়ের রং উজ্জ্বল করতে সাহায্য করবে।

গর্ভাবস্থায় কি খেলে বাচ্চার গায়ের রং উজ্জ্বল হয় সেটা না ভেবে বাচ্চার সুস্বাস্থ্য এবং নিজেকে মানসিকভাবে ঠিক রাখার জন্য নিয়মিত ব্যায়াম করা দরকার। ভারী ব্যায়াম করতে না পারলেও হাটাহাটি করা উচিত। নিয়মিত ধর্মীয় গ্রন্থ মনীষীদের বাণী ইত্যাদি পড়া উচিত। আপনি সব সময় হাসি খুশি থাকুন তাহলে আপনার সন্তানও ভালো থাকবে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আনি টিপস ৩৬৫ নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url