খুব সহজেই কারেন্ট বিল নির্ণয় করার কার্যকারী পদ্ধতি
কারেন্ট আমাদের নিত্য ব্যবহার্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ জিনিস। বর্তমান যুগে কারেন্ট বা বৈদ্যুতিক সংযোগ ছাড়া আমাদের দৈনন্দিন জীবনের বিভিন্ন কাজ করা সম্ভব না। বরং বলা যায় বৈদ্যুতিক সংযোগ ছাড়া আমরা অচল হয়ে পড়বো।
পোস্ট সূচীপত্রঃখুব সহজেই কারেন্ট বিল নির্ণয় করার কার্যকারী পদ্ধতি
- বাসা বাড়িতে ব্যবহার্য বিভিন্ন যন্ত্রের লোডের পরিমাণ
- কারেন্ট বিল নির্ণয়ে ব্যবহার্য পরিমাণগুলো
- কারেন্ট বিল নির্ণয়ে দিনের হিসাব
- কারেন্ট বিল নির্ণয় করার সূত্র
- পাওয়ার বা ওয়াটের পরিমাণ বের করার নিয়ম
- কারেন্ট বিল নির্ণয়ের গাণিতিক উদাহরণ
- কারেন্ট বিলের সাথে আরও যেসব চার্জ যোগ হয়
- কনটেন্টটিতে আমার মতামত
বাসা বাড়িতে ব্যবহার্য বিভিন্ন যন্ত্রের লোডের পরিমাণ
কারেন্ট বিল নির্ণয় করার জন্য আমরা প্রতিদিন কত ওয়াট ক্ষমতার যন্ত্র ব্যবহার
করে থাকি সে বিষয়ে আগে জানা প্রয়োজন। সাধারণত আমাদের দৈনন্দিন জীবনে
ব্যবহৃত যন্ত্রপাতির লোড নেবার পরিমাণ গুলো হলোঃ
- ব্যবহার্য সাধারণ লাইট = ১৫-২০০ ওয়াট(W)
- ব্যবহার্য সাধারণ ফ্যান = ৫০-৮০ ওয়াট(W)
- ব্যবহার্য সাধারণ টেলিভিশন =২৫-১০০ ওয়াট(W)
- ব্যবহার্য সাধারণ রেফ্রিজারেটর = ৮০-২০০ ওয়াট(W)
- সাধারণত এসির ক্ষেত্রে = ১০০০-৩০০০ ওয়াট(W)
- ব্যবহার্য সাধারণ আয়রন =৫০০-১০০০ ওয়াট(W)
- ডেক্সটপ কম্পিউটার বা ল্যাপটপ = ৮০-২৫০ ওয়াট(W)
- বিভিন্ন মোটর পাম্প = ১/৮ থেকে ৩ হর্স পাওয়ার (HP)
এখানে আমি বলছি না যে আপনাকে উপরিক্ত ক্ষমতার মধ্য যন্ত্রপাতি ব্যবহার করতে হবে। এই ওয়ার্ডগুলো দেখানো হয়েছে আপনাকে বিল নির্ণয়ের ধারণা দেবার জন্য।
আরও পড়ুনঃখুব সহজেই আর্টিকেল র্যাঙ্কিং করানোর ১০টি উপায়কারেন্ট বিল নির্ণয়ে ব্যবহার্য পরিমাণগুলো
- 1kWH =1 UNIT ইউনিট ( KWH হল কিলো ওয়াট আওয়ার )
- 1 HP = 746 ওয়াট(W)
- 1 KH = 1000 কিলো ওয়াট (KW)
- H = Time in hour (প্রতি ঘন্টা সময়)
কারেন্ট বিল নির্ণয়ে দিনের হিসাব
কারেন্ট বিল নির্ণয়ের জন্য ঘন্টা এবং দিনের ব্যবহার করা হয়
। তাই কারেন্ট বিল নির্ণয় করার জন্য কোন মাস কতদিনের সেটা
জানা দরকার।
- জানুয়ারি =৩১ দিন
- ফেব্রুয়ারি =২৮ দিন
- মার্চ =৩১ দিন
- এপ্রিল =৩০ দিন
- মে =৩১ দিন
- জুন =৩০ দিন
- জুলাই =৩১ দিন
- আগস্ট =৩১ দিন
- সেপ্টেম্বর =৩০ দিন
- অক্টোবর =৩১ দিন
- নভেম্বর =৩০ দিন
- ডিসেম্বর =৩১ দিন
কারেন্ট বিল নির্ণয় করার সূত্র
কারেন্ট বিল (ইউনিট) = P*T/1000
= বৈদ্যুতিক পাওয়ার বা ওয়াট (P) * ঘন্টায় সময় (T) / ১০০০
এখানে,
W অথবা P = বৈদ্যুতিক পাওয়ার
V = ভোল্টেজ
I = কারেন্ট [ কারেন্টের একক অ্যাম্পিয়ার(A) ]
T = সময় (ঘন্টা)
[ T = বিদ্যুৎ দিনে কয় ঘন্টা ব্যবহার করা হয় ]
আবার,
বৈদ্যুতিক পাওয়ার P = I*V
এখানে,
I = কারেন্ট
V = ভোল্টেজ
বৈদ্যুতিক একক হল কিলোওয়াট আওয়ার (KWH) বা ইউনিট
আরও পড়ুনঃসাবুদানা খাওয়ার উপকারিতা
পাওয়ার বা ওয়াটের পরিমাণ বের করার নিয়ম
বিদ্যুৎ বিল নির্ণয়ের জন্য আমাদেরকে প্রথমে পাওয়ার বা ওয়াটের পরিমাণ
বের করতে হবে
যেকোনো সিঙ্গেল ফেজের ক্ষেত্রে পাওয়ার P = V*I/1000 KWH
যেকোনো ডাবল ফেজের ক্ষেত্রে পাওয়ার P = V*I*1.414/1000 KW
যেকোনো থ্রি ফেজের ক্ষেত্রে পাওয়ার P =V*I*1.732/1000 KW
মোট ব্যবহার্য পাওয়ার বের করার পর মোট ব্যবহার্য সময়কে গুণ করে ১০০০ দিয়ে ভাগ করলে মোট ব্যবহার্য বিদ্যুতের পরিমাণ বা ইউনিট পেয়ে যাবেন। সরকার নির্ধারিত ইউনিট প্রতি কারেন্টের দামের সাথে আপনার ব্যবহার্য ইউনিটকে গুণ দিলে কারেন্ট বিলের পরিমাণ পেয়ে যাবেন।
কারেন্ট বিল নির্ণয়ের গাণিতিক উদাহরণ
মনে করি,
একটি বাসা বাড়িতে ৩০ ওয়াটের ৮ টি লাইট দৈনিক ১০ ঘন্টা, ৬৫ ওয়াটের ৩ টি ফ্যান দৈনিক ১৬ ঘন্টা,৬০ ওয়াটের ১ টি টেলিভিশন ১০ ঘন্টা,১২০ ওয়াটের ১ টি রেফ্রিজারেটর দৈনিক ২৪ ঘন্টা এবং পানির ১ টি পাম্প ১/৮ HP মটর ২ ঘন্টা। বাসা বাড়িতে সংযুক্ত কারেন্ট লাইনের ভোল্টেজ ২২০ ওয়াট। তাহলে ঐ বাসায় ঐ মাসের বিদ্যুৎ বিল কত আসবে চলুন দেখি।
সমাধানঃ
৩০ ওয়াটের লাইটের জন্য; W1=30*8*10=2400 Watt
৬৫ ওয়াটের পাখার জন্য; W2=65*3*16=3120 Watt
৬০ ওয়াটের টেলিভিশনের জন্য; W3=60*1*10=600 Watt
১২০ ওয়াটের রেফ্রিজারেটরের জন্য; W4=120*1*24=2880 Watt[1 HP = 746 ওয়াট(W)]
পানির পাম্পের জন্য; W5=(1/8)*746*2=186.5 Watt
১ দিনে মোট পাওয়ার খরচ P=W1+W2+W3+W4
=(2400+3120+600+2880+186.5) W
=9186.5 W
=(9186.5/1000)KW
=9.1865 KW
৩০ দিনে মোট পাওয়ার খরচ P=(9.1865*30)KW
=275.6 KW( ইউনিট)
1 ইউনিট কারেন্ট এর দাম 3.84 টাকা
275.6ইউনিট কারেন্ট এর দাম (275.6 * 3.84) টাকা
=1058.30 টাকা
আরও পড়ুনঃসাবুদানা চিনার সহজ উপায়
কারেন্ট বিলের সাথে আরও যেসব চার্জ যোগ হয়
1058.30 টাকা কারেন্ট বিলের সাথে ভ্যাট, ট্র্যান্সফারমার ভাড়া, মিটার ভাড়া ইত্যাদি চার্জ যোগ করে আপনার মোট কারেন্ট বিলের পরিমান সরকার নির্ধারন করে
মন্তব্য
খুব সহজেই কারেন্ট বিল নির্ণয় করার এইটা একটা ভীষণ কার্যকারী পদ্ধতি। আমি নিজেও এই পদ্ধতিতে কারেন্ট বিল নির্ণয় করি।আপনি এই পদ্ধতিতে কারেন্ট বিল নির্ণয় করে খুব সহজেই বুঝতে পারবেন আপনার জন্য সরকার নির্ধারিত বিলের পরিমাণ ঠিক আছে কিনা।
আনি টিপস ৩৬৫ নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url