পায়ের নখের কুনি দূর করার ৬টি কার্যকারী উপায়

 

আপনি কি? পায়ের নখের কুনি দূর করার ৬টি কার্যকারী উপায় খুঁজছেন তাহলে আজকের আর্টিকেলটি আপনার জন্য। অনেক সময় পায়ের নখের সাইডের কালার হালকা হলুদ বর্ণ ধারণ করে এবং প্রচন্ড ব্যথা হয়। নখ নড়ানো যায় না এবং ধাপ ফেলতে কষ্ট হয়। প্রচলিত ভাষায় পায়ের নখের এই সমস্যাকে বলে নখকুনি। নখকুনি শুধুমাত্র পায়ে বসে এমনটি নয় অনেক সময় হাতের নখেও এই সমস্যা দেখা যায়।

পায়ের নখের কুনি দূর করার ৬টি কার্যকারী উপায়

পায়ের নখে নখকুনি বেশি বসে কারণ হাতের নখের তুলনায় পায়ের নখকে অনেক বেশি ধুলাবালি, পানি, আবর্জনা, কাদা এসব সহ্য করতে হয়। সুইমিংপুলে অনেক সময় ধরে গোসল করলে, পানিতে পা অনেক সময় ধরে ভিজিয়ে রাখলে,কাদা মাটি ধুলাবালিতে বেশি চলাচল করলে সমস্যাটি হয়ে থাকে। তাহলে আপনি কিভাবে নখে কুনি বসলে সেটার যত্ন নিবেন এবং কিভাবে নখকুনি বসা রোধ করবেন এ বিষয়ে বিস্তারিত জানতে আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ পড়ুন।

পোস্ট সূচিপত্রঃপায়ের নখের কুনি দূর করার ৬টি কার্যকারী উপায়

পায়ের নখের কুনি দূর করার ৬টি কার্যকারী উপায়

পায়ের নখের কুনি দূর করার ৬টি কার্যকারী উপায় সম্পর্কে আমরা এই আর্টিকেলটিতে জানব। পায়ের নখে কুনি বসা একটি ভয়াবহ সমস্যা।কুনি বসলে পায়ের নখে অসহ্য ব্যথা হয় ,নখ ফুলে যায় এবং ভেতরে পুজ হয়ে যায়। আমরা যখন অনেক সময় ধরে কাদামাটি ধুলাবালি পানিতে ইত্যাদির মধ্য থাকি থাকি তখন কাদামাটি ধুলাবালি থেকে ছত্রাক আমাদের পায়ের নখে ঢুকে যায়। 

এই ছত্রাকের আক্রমণেই পায়ের নখে কুনি বসে,ব্যাথা হয় এবং নখ ফুলে যায়। চিকিৎসা বিজ্ঞানে নখের কুনি দূর করার অনেক মলম,থেরাপি,ট্যাবলেট থাকলেও এগুলো অনেক খরচ সাপেক্ষ এবং নখের জন্য অনেকটাই ক্ষতিকর। আমরা চাইলে খুব সহজেই বাড়িতে ঘরোয়া উপায়ে নখে কুনি বসার সমস্যা থেকে বাঁচতে পারি। চলুন নখের কুনি বসার সমস্যা থেকে মুক্তির ঘরোয়া উপায়গুলো সম্পর্কে জেনে নিই।

আরো পড়ুনঃনখ কুনি বসা প্রতিকারের উপায়

লবণ ও অলিভ অয়েল মিশ্রিত পানি

গরম পানিতে ছত্রাক মারা যায়। তাই একটু হালকা গরম পানিতে কিছুটা লবণ এবং অলিভ অয়েল মিশ্রিত করে কুনি বসা পাটি  ২০-৩০ মিনিট ভিজিয়ে রাখলে লবণ ও গরম পানির প্রভাবে নখের মধ্য হওয়া ছত্রাক মারা যায় । ব্যথাও তৎক্ষণাৎ কিছুটা কমে যায় এবং ফোলা কমে যায়। এভাবে দিনে দুই থেকে তিনবার করলে ছত্রাকের সংক্রমণ কমে যায়।

আপনি যদি কুনি ভাষা বসা সমস্যায় ভুগেন তাহলে এই উপায়টি অবলম্বন করতে পারেন। এই উপায়টি আপনার জন্য কুনি বসার সমস্যা দূর করতে অনেকটাই সহায়তা করবে ।

পায়ের নখের কুনি দূর করার ৬টি কার্যকারী উপায়

কুনি বসা জায়গায় ভুট্টার গুঁড়ো ব্যবহার

ভুট্টার গুঁড়ো নখকুনি থেকে বাঁচার একটা  ঘরোয়া এবং কার্যকারী উপায়। ভুট্টা একটি সহজলভ্য জিনিস। ভুট্টার গুড়া ছত্রাকনাশক হিসেবে কাজ করে। প্রথমে ভুট্টা গুঁড়ো করে নিয়ে একটি প্যানে করে গরম করে নিতে হবে। তারপর ভুট্টা গুড়োকে ঠান্ডা করে সামান্য জল দিয়ে পেস্ট বানিয়ে নিতে হবে। এরপর পেস্টটি কুনি বসা জায়গায় ভালো করে লাগিয়ে দিতে হবে।

কিছুক্ষণের মধ্যেই দেখতে পাবেন আপনার কুনি বসা জায়গার ব্যথা কমে গেছে এবং ব্যথাও অনেকটা কমে গেছে। সপ্তাহে ২-৩ বার ব্যবহার করলে ভালো ফল পাবেন।

ভিক্স ভ্যাপো রাব বাম ব্যবহার

ভিক্স ভ্যাপো রাব বামটি আমরা সাধারণত মাথা ব্যথা হলে ব্যবহার করে থাকি। আমরা অনেকেই জানিনা এই বামটি কুনি বসা নখের জন্য কতটা কার্যকারী। ভিক্স ভ্যাপো রাব বাম কুনি বসা নখে ব্যবহার করলে এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। প্রতিদিন অন্তত একবার করে ভিক্স ভ্যাপো রাব বামটি লাগালে কুনি বসা রোধ হয়।

ইউরিয়া পেস্ট ব্যবহার করা

ইউরিয়া ছত্রাক নাশক হিসেবে কাজ করে। সেজন্য ইউরিয়া মিশ্রিত রয়েছে এমন ক্রিম নখ কুনি আক্রান্ত জায়গায় লাগিয়ে রাখলে ছত্রাক মরে যায় এবং ব্যথা কমে যায়। তাছাড়াও এরিয়া ইউরিয়া সারের রসও ব্যবহার করতে পারেন। ইউরিয়া মিশ্রিত ক্রিম লাগানোর পর তার ওপর এন্টিফাঙ্গাল জাতীয় কোন ক্রিম লাগিয়ে রাখলে খুব তাড়াতাড়ি উপকার পাওয়া যায়।

আরো পড়ুনঃগর্ভাবস্থায় কি খেলে বাচ্চার গায়ের রং উজ্জ্বল হয় 

চা গাছের তেল ব্যবহার 

নখের কুনি দূর করতে চা গাছের তেল একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান ।চা গাছের তেল ও চা পাতা ছত্রাক নাশক হিসেবে কাজ করে। চা গাছের তেল বিভিন্ন ভাইরাস জীবাণুর সংক্রমণ প্রতিরোধ করে। চা গাছের তেল একটু গরম করে তার সাথে একটু অলিভ অয়েল মিক্সড করে নখের উনি বসা জায়গায় লাগাতে হবে। এভাবে তেল লাগানোর কোন পরে দেখতে পাবেন কুনি বসা জায়গার ব্যথা অনেকটাই কমে গেছে।

আপনার কাছে যদি চা পাতার গাছের তেল না থাকে তাহলে আপনি চা পাতা দিয়েও কাজটি করতে পারেন। কিছুটা জলের মধ্যে এক টেবিল চামচ চা পাতা দিয়ে ৫-৬ মিনিট ফুটিয়ে নিয়েন তারপর ছেঁকে চায়ের রসটি নখের কুনি বাসা জায়গাটিতে লাগান। এতেও ছত্রাক মারা যাবে এবং ব্যথা কমে যাবে।

পায়ের নখের কুনি দূর করার ৬টি কার্যকারী উপায়

কুনি বসা নখে নেলপলিশ লাগানো

নেলপলিশের থাকা এসিড নখ কুনির ছত্রাক নাশক এবং ব্যথা নাশক হিসেবে কাজ করে।যে নখের সাইটে কুনি বসেছে সেই নখটির কনা ভালো করে কেটে পরিষ্কার করে আক্রান্ত জায়গায় বেশি করে নেলপলিশ লাগিয়ে রাখলে ব্যথা কমে যায় এবং নখটি আস্তে আস্তে ঠিক হয়ে যায়।

আপনি যদি নখ কুনি বসা সমস্যায় ভুগেন তাহলে প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর এবং সন্ধ্যায় পা পরিষ্কার করার পর কুনি বসা জায়গায় নেলপালিশ লাগিয়ে রাখতে পারেন।

নিয়মিত হাত ও পায়ের নখ কাটা

নখের কুনি বসা সমস্যা দূর করতে নিয়মিত হাত ও পায়ের নখ কাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। নখ বড় হয়ে গেলে নখের ভেতর ধুলাবালি,আবর্জনা,কাদামাটি,ছত্রাক,ভাইরাস, বিভিন্ন জীবাণু  ঢুকে যায় এবং বাসা বাঁধার জায়গা পাই। এভাবেই ছত্রাক নখকে আক্রমণ করে এবং নখে কুনি বসে।

তাই কুনি বসার সমস্যা থেকে বাঁচতে সপ্তাহে নিয়মিত অন্তত দুইদিন নখ কাটুন নির্দিষ্ট আকারে। যাতে নখ বড় হয়ে মাংসের মধ্য ঢুকে না যায় এবং নখের ভেতর ছত্রাক আক্রমণ না করতে পারে।

আরো পড়ুনঃখুব সহজেই আর্টিকেল র‍্যাঙ্কিং করানোর ১০টি উপায়

নিয়মিত নখ পরিষ্কার করা

নখের কুনি বসা সমস্যা থেকে বাঁচতে নিয়মিত নখ পরিষ্কার রাখা ভীষণ জরুরি । বাইরে  কাদামাটি, ধুলোবালি,ময়লা পানি  ইত্যাদির মধ্যে দিয়ে হেঁটে আসলে এমনিতেই পায়ের নখের ভেতর  ধুলাবালি, ছত্রাক, ভাইরাস এবং বিভিন্ন জীবাণু ঢুকে যায়। তাই বাইরে থেকে আসার পর সাবান বা স্যাভলন দিয়ে নখ পরিষ্কার করার জরুরি যাতে নখে কোন ধুলাবালি আবর্জনা জীবাণু না থাকে।

 নখে ধুলাবালি, ময়লা থেকে গেলে সেখান থেকে ছত্রাক নখকে সংক্রমণ করবে এবং নখ ফুলে গিয়ে  ব্যথা হবে । তাছাড়াও নখ কাটার পর নখের কোন সাইট কেটে গেলে এবং সেখান থেকে রক্ত পড়লে সেটাও স্যাভলন দিয়ে পরিষ্কার করতে হবে যাতে সেখান দিয়ে কোন জীবাণু ঢুকে সংক্রমণ না করতে পারে।

ব্যবহৃত জুতা ও মোজা নিয়মিত পরিষ্কার করা

নখে ছত্রাকের সংক্রমণ এড়াতে বাইরে থেকে আসার পর নিয়মিত জুতা ও মোজা পরিষ্কার করা জরুরি। নিয়মিত পরিষ্কার না করলে বাইরের ধুলোবালি, আবর্জনা,ময়লা থেকে আসা জীবাণু জুতার মধ্যেই থেকে যায় এবং পায়ের নখে সংক্রমণ করে। ফলে নখে কুনি বসে এবং নখ ফুলে ব্যথা হয় নখের ভিতরে পুজ হয়।

আর্টিকেলটি সম্পর্কে লেখকের মন্তব্যঃপায়ের নখের কুনি দূর করার ৬টি কার্যকারী উপায়

পায়ের নখের কুনি দূর করার ৬টি কার্যকারী উপায় সম্পর্কে উপরিউক্ত পুরো আর্টিকেলটিতে আলোচনা করা হয়েছে। নখকুনি একটি গুরুতর সমস্যা বলে আমি মনে করি। আপনি যদি নখ কুনি সমস্যয় ভোগেন তাহলে আর্টিকেলটিতে দেওয়া উপায়গুলো অবলম্বন করে দেখতে পারেন ।আশা করছি আপনি ভালো ফল পাবেন এবং পার্মানেন্টলি সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আনি টিপস ৩৬৫ নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url